নিউজ ডেক্স: ঢাকা দক্ষিণের কার্যালয় নগর ভবনই যেন মশার খামার। নগরবাসীকে সচেতন করতে নগরীর প্রতিটি রাস্তায় মাইকিং করা হচ্ছে, বিলবোর্ডে, টেলিভিশনে বিভিন্ন ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে।
সরেজমিনে গত কয়েকদিন গিয়ে দেখা যায়, ভবনের পেছন দিকে ড্রেনগুলো ময়লা আবর্জনায ভর্তি। ডাবের খোসা, চিপসের প্যাকেট, প্লাস্টিকের বাটি, ল্যাম্পপোস্ট এর লাইটবক্সে পানি জমে আছে। যার মধ্যে এডিস মশার লার্ভা ও এডিস মশা বংশবিস্তারের উপযোগী পরিবেশ দৃশ্যমান। এছাড়া নগর ভবনের সামনের দিকটায় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকলেও পেছন দিকটা যেন এক ময়লার ভাগাড়।
অথচ ডেঙ্গু প্রতিরোধে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের নগরপিতা সাঈদ খোকন নগরবাসীকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন নিয়মিত। মশার প্রজননের স্থানগুলো পরিষ্কার রাখার জন্যও তোড়জোড় চালাচ্ছেন দক্ষিণের নগরপিতা।
সরেজমিনে আরো দেখা যায়, ভবনের পেছন দিকে সিটি করপোরেশনের পুরোনো ল্যাম্পপোস্ট, ডিভাইডার, ময়লার কন্টেইনার, সারি সারি ওষুধের ড্রাম, ক্যাবল কভার, ভাঙাচোরা ময়লার বিনসহ নানা জিনিসপত্র স্তুপ করে রাখা; যার নিচে জমে আছে পানি।
বাসা-বাড়িতে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়ে জরিমানা ও কারাদণ্ড দিচ্ছে।
প্রতিদিন ডিএসসিসি’র প্রতি ওয়ার্ডে কমপক্ষে ৩০টি বাড়িতে মশক নিধন কর্মীরা যাচ্ছেন। এখন পর্যন্ত ১৩ হাজার ৪১৪টি বাড়ি পরিদর্শন করে ৫৪৭টি বাড়িতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেছে বলে জানান মেয়র।
মেয়র জানান, এডিস মশার প্রজননের ক্ষেত্র পাওয়ায় ৬৬টি নির্মাণাধীন ভবনকে জরিমানা করা হয়েছে। একজনকে কারাদণ্ডও দেয়া হয়েছে। এসবে নির্মাণাধীন ভবন মালিকরা সচেতন হবেন বলে তার আশা।
এগুলোর পরেও সচেতন না হলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে নগর কর্তৃপক্ষ পিছপা হবে না বলে জানান মেয়র।
এডিস মশা নিধনের কাজ না হওয়ার জন্য ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ায় ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনকেই দায়ী করা হচ্ছে; তাদের কাজ নিয়ে আদালতও উষ্মা প্রকাশ করেছে।
ডিএসসিসি;র অতিরিক্ত প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা খন্দকার মিল্লাতুল ইসলাম ডেইলি বাংলাদেশকে বলেন, আমরা প্রতিনিয়ত পরিষ্কার করে থাকি। তবে মেট্রোরেলের কাজের কারণে কিছু মালামাল উঠিয়ে এনে এখানে স্তুপ করে রাখা হয়েছে। যার কারণে একটু ময়লা হতে পারে। আমি এখনই মশক নিধনের পরিচ্ছন্নকর্মীদের বলে দিচ্ছি, তারা পরিষ্কার করে ফেলবে।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সচিব মোস্তফা কামাল মজুমদার ডেইলি বাংলাদেশকে বলেন, এই বিষয়ে এখনই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তবে এই বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি ফোন ধরেননি।
ভিকারুননিসা নূন স্কুল ও কলেজে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে মেয়র খোকন বলেছেন, সেপ্টেম্বরের আগে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব নয়।
এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বর এবার ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ায় তা যেমন অনেকের মৃত্যুর কারণ হয়েছে, তেমনি এরইমধ্যে ১৭ হাজারের বেশি মানুষকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়েছে।