বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ পাস করেও জোটেনি চাকরি, করছেন মুচির কাজ!
নিউজ ডেস্কঃবিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার খরচ যোগাতে জুতা পালিশের কাজ বেছে নিতে বাধ্য হয় ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনার সুভাষ। সর্বোচ্চ ডিগ্রি অর্জন করেও ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি এতটুকু। নিজের খরচ চালাতে এখনো তাকে জুতা পালিশ এর কাজ করতে হয়।
ভাগ্য বিড়ম্বনার শিকার এই তরুণের গল্প তুলে ধরেছে আনন্দবাজার পত্রিকা। সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনার সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকার একটি গ্রামের বাসিন্দা সুভাষচন্দ্র দাস। তিনি এমএ পাস করেছেন রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। কিন্তু চাকরি না পাওয়ায় এখনো ফুটপাতে জুতা পালিশ করেন।
উচ্চশিক্ষিত যুবকটিকে এলাকায় সকলে তাকে চেনেন। আর তাই কিছু শিক্ষার্থীকে পড়িয়ে আয় করেন বাড়তি কিছু টাকা। সুভাষ বলেন, ‘রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাস নিয়ে এমএ করেছি। বহু চেষ্টা করেও সরকারি চাকরি পাইনি। কিন্তু সংসার তো চালাতে হবে।’
বাড়িতে অসুস্থ মা, ভাই, দুই বোন। সকলের ভরণপোষণের দায়িত্ব সুভাষেরই। সংসার চালাতে জুতো পালিশ করতেও আপত্তি নেই তার। সেটিই করছেন তিনি। যোগেশগঞ্জ বাজারে ফুটপাতের ধারে জুতা পালিশের সরঞ্জাম নিয়ে বসেন দিনে দুইবেলা। এর ফাঁকে পড়িয়ে আসেন কিছু ছাত্র।
সুভাষ জানান, তার পরিবারে কখনোই সচ্ছলতা দেখেননি। কলেজে পড়ার সময় বারাসাতে এক পরিচিতের বাড়িতে থাকতেন। তখনও নিজের খরচ চালাতে প্ল্যাটফর্মে বা ট্রেনে জুতো সেলাই, পালিশের কাজ করতেন। কিন্তু যে বাড়িতে থাকতেন, সে বাড়ির মালিকের চোখে পড়ে যায় ঘটনাটা। তখন তাকে জানিয়ে দেওয়া হয়, জুতা পালিশ করলে তার বাড়িতে জায়গা হবে না। এরপর সুভাষকে আশ্রয় দেন স্থানীয় এক মুদি দোকানদার। সেখানে থেকে ছাত্র পড়িয়ে নিজের পড়ার খরচ চালাতে থাকেন।তার স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষক লক্ষ্মীকান্ত সাহা বলেন‘ছোট থেকেই ছেলেটা মেধাবী। অনেক কষ্ট করে পড়াশোনা চালিয়েছে। এখনও যে ভাবে সংসার চালাচ্ছে, তাকে শ্রদ্ধা না জানিয়ে পারা যায় না।
স্থানীয় এমপি দেবেশ মণ্ডল বলেন‘উচ্চশিক্ষিত যুবককে জুতো পালিশ করতে দেখলে খারাপ তো লাগেই। ও যাতে একটা সরকারি চাকরি পায়, সেই চেষ্টা করছি।’
দিনরাত জুতা পালিশ করে গেলেও সরকারি চাকরির স্বপ্ন দেখাটা এখনও ছাড়তে পারেনি সুভাষ। কোনো কাজই ছোট নয় জানিয়ে সুভাষ জানান, চাকরি না পেলে রেলের বগিতে জুতা পালিশ করেই জীবন পার করে দিতে সমস্যা নেই তার।