নিজস্ব প্রতিবেদক:-
মানবিক দিক বিবেচনায় কারান্তরীণ বিশ্বনন্দিত মুফাসসির মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মুক্তির দাবি জানিয়ে অনলাইনে ব্যাপক প্রচারণা চালিয়েছে তার ভক্ত-সমর্থকরা।
শনিবার (২ মে) দিনভর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে দল-মত নির্বিশেষে একযোগে প্রচার চালান সাঈদি সমর্থকরা।
জানা গেছে, শুক্রবার (১ মে) দিনগত রাত ১২ টা থেকে বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বসবাস করা সাঈদিপ্রেমীরা অনলাইন প্রচারণা শুরু করেন। ফেসবুক, ট্যুইটারসহ সামাজিক যোযোগমাধ্যমে সাঈদির মুক্তি চেয়ে বাংলা ও ইংরেজিত বিভিন্ন শ্লোগান যুক্ত করে বিভিন্ন ধরণের পোস্টার শেয়ার করেন। এসব পোস্টারের সাথে বেশিরভাগ জায়গায় ‘#FreeSayedee‘ ও ‘#SaveBangladesh‘ হ্যাশটাগ দিয়ে পোস্ট শেয়ার করেন তার ভক্তরা।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে শেয়ার করা পোস্টারে দেখা যায়, এসব পোস্টারের বেশিরভাগ জায়াগায় তার ভক্তরা মাওলানা সাঈদিকে- ‘কুরআনের খাদেম, মুসলিম উম্মাহর ঐক্যের প্রতীক, ইসলামের সম্পদ, সত্যের সৈনিক, প্রতিবাদের প্রতীক, উম্মতের শ্রেষ্ট সন্তান ও যুগের মুয়াজ্জিন’ হিসেবে আখ্যায়িত করে তার নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেছেন।
ফেসবুকে শেয়ার করা রঙিন এসব পোস্টারে বিভিন্ন শ্লোগানের পাশাপাশি সাঈদির ছবিও ব্যবহার করতে দেখা গেছে। এছাড়া সাঈদি ভক্ত-সমর্থকরা তার মুক্তি চেয়ে গান, কবিতাসহ দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন জায়গার ওয়াজ মাহফিলের ছোট ছোট ভিডিও ক্লিপ ব্যাপকহারে শেয়ার করেছেন।
দিনভর মাইক্রোব্লগিং সাইট ট্যুইটারেও বাংলাদেশ ট্রেন্ডিংয়ে `#FreeSayedee‘ হ্যাশট্যাগটির দখলে ছিলো।
এদিকে কারান্তরীণ মাওলানা সাঈদির মুক্তি চেয়ে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি অনলাইনে ক্যাম্পেইন করেছে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার (২৮ এপ্রিল) থেকে দেশের সকল জেলা ও মহানগরী আমিরসহ বিশ্বের নানাদেশে অবস্থানরত দায়িত্বশীল নেতাদের উদ্দেশে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা পাঠানো হয়। সরকারের কাছে সাঈদির মুক্তির জন্য অনলাইন প্রচারণায় একটি বিশেষ কমিটিও গঠন করে জামায়াতে ইসলামী।
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সাঈদী বার্ধক্যে এসে গেছেন। ১০ বছর তিনি জেলে থাকলেন। হার্টে রিং পরানো। সরকারের উচিত তার প্রতি মানবিক দায়িত্ব পালন করা। জনমতের প্রতি সরকার শ্রদ্ধা দেখাবে বলে আশা করি।’
উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হন জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী। তবে পরে উচ্চ আদালতে আপিল করা হলে আদালত তার সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ডের আদেশ দেয়। ডায়েবেটিসসহ নানা জটিল রোগে ভোগায় রায়ের পর থেকে বারডেমের সেলেই আছেন সাঈদী।
তবে শুরু থেকেই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার তৈরি হয়। তার পরিবারের সদস্যরা এবং জামায়াত ইসলামীও বিচারের প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলে।
এমনকি প্যারোলে ছেলের জানাজায় অংশ নিয়ে মাওলানা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদি বলেন, ‘আমি আল্লাহর নামে কসম করে বলছি। ও আল্লাহ তোমার জাতের কসম, তোমার ইজ্জতের কসম, তোমার সম্মানের কসম। ১৯৭১ সনের এক ফোঁটা বালি বা কাঁদা আমার গায়ে লাগে নাই, লাগে নাই, লাগে নাই।’