ভয়েসঅবসিলেট ডেস্কঃ মৌলভীবাজারে সরকারি সেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে উদ্ভূত সমস্যা শোনা এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতামূলক প্রশাসনিক ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে গণশুনানি করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ সময় ১২টি সরকারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অন্তত ৪০টির বেশি অভিযোগ জমা হয়। সোমবার (২৯ জুলাই) সকাল থেকে দুপুর দুইটা পর্যন্ত সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে এ গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
সেবাগ্রহীতারা সবচেয়ে বেশি অভিযোগ করেছেন উপজেলা ভূমি অফিসের বিরুদ্ধে। মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের বিরুদ্ধেও অভিযোগের শেষ নেই। সবমিলিয়ে লিখিত ও মৌখিক ৪০টির বেশি অভিযোগ জমা পড়ে। সব অভিযোগেরই শুনানি হয়। এ সময় আনিত অভিযোগের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সরকারি দফতরের কর্মকর্তাসহ জনসাধারণের বক্তব্য শোনা হয়। উপস্থিত জনসাধারণের মধ্যে ভূক্তভোগী ২০ জনের মৌখিক অভিযোগ শোনেন স্থানীয় প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা।
এছাড়া জরিপ অফিস, সাব-রেজিস্ট্রি অফিস, উপজেলা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, উপজেলা হিসাব রক্ষণ অফিস, উপজেলা সমাজসেবা অফিস, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার অফিস, উপজেলা সমবায় অফিস, উপজেলা যুব উন্নয়ন অফিস, উপজেলা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা হয়। এ সময় সেবাগ্রহীতাদের অভিযোগ শুনে সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসা করা হলে তারা অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে লোকবল সংকটের কথা জানান।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি দুর্নীতি দমন কমিশনের মহাপরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান আশ্বস্ত করে বলেন, যেসব দফতরের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে সেই দফতরের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, ‘সরকার বিপুল পরিমাণ টাকা ব্যয় করে দেশের উন্নয়নে। প্রতিটি বাজেট আগের বাজেটকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে। বাজেটের ওই টাকা সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারলে দেশ সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড ও মালেশিয়ার মতো হয়ে যেতো। কিন্তু দুর্নীতির কারণে সব উন্নয়ন ব্যর্থ হচ্ছে।’ দুদক মহাপরিচালক আরও বলেন,‘দুর্নীতির কারণে বাজেটে বরাদ্দ করা অর্থের সদ্ব্যবহার হচ্ছে না। তাই যাবতীয় উন্নয়ন প্রচেষ্টাকে কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না।’
মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক বেগম নাজিয়া শিরিনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আশরাফুল আলম খাঁন (রাজস্ব), অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আনোয়ারুল ইসলাম, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মো. কামাল হোসেন, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান ও জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও সাবেক সচিব আব্দুল কাদির মাহমুদ। এতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন।