বাংলাদেশের যা কিছু অর্জন হয়েছে তার সব কিছুতেই ছাত্রলীগের অবদান রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ছেষট্টির ছয় দফা, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ ও স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনসহ সকল কিছুতেই বাংলাদেশ ছাত্রলীগের বিশেষ অবদান রয়েছে।
শনিবার বিকেল সাড়ে তিনটায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ কর্তৃক আয়োজিত সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক আশরাফুল ইসলাম টিটনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসাবে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য অ্যাডভোকেট কাজী নজীবুল্লাহ হীরু, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, নজরুল ইসলাম বাবু এমপিসহ জগন্নাথ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন এবং বক্তব্য প্রদান করেন।
সম্মেলন উদ্বোধন করেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন এবং প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী।
জবি ছাত্রলীগের প্রশংসা করে মন্ত্রী বলেন, ছাত্রলীগের এমনও সময় গেছে যে সময় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (তৎকালীন জগন্নাথ কলেজ) শাখা ছাত্রলীগ মিছিল বের না করলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কোনো মিছিল বা আন্দোলন করতে পারতো না। তখন থেকেই এই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের একটা শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিতি অর্জন করেছে। আশা করছি আগামীতেও এর ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে।
তিনি আরো বলেন, আমরা ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার যে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে যাচ্ছি তার নেতৃত্ব কে দিবে? এই ছাত্রলীগকেই দিতে হবে, তার জন্য তাদেরকে তৈরি হতে হবে। ২০৪০ সালে আমরা উন্নত বাংলাদেশে যাচ্ছি, তারও নেতৃত্ব এই ছাত্রলীগকেই দিতে হবে। আমরা সেই স্বপ্নই দেখছি, আমরা আশা করি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সেই ভূমিকাটাই নিবে। নতুন নতুন নেতা এসে আমাদের শূন্য স্থানগুলো পূরণ করবে।
যারা নেতা নির্বাচন করবে তাদেরকে উদ্দেশ্য করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, যারা নেতা নির্বাচন করবে তারা দেখেশুনে নেতা নির্বাচন করবেন। যাদের ছাত্রত্ব আছে সেই ধরণের ছাত্রদেরকে নেতা নির্বাচন করুন। যার নামে কোনো কলঙ্ক নেই এমন নেতা তৈরি করুন। যাদের নেতৃত্বে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ একটা সুন্দর জায়গায় পৌঁছতে পারে।
জবি ছাত্রলীগের নেতা কর্মীদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনারা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্বের ইতিহাস ও গৌরব ধরে রাখবেন। যাকেই নেতা নির্বাচন করুক তাকেই নেতা হিসেবে সবাইকে মানতে হবে। সবাই হয়তো সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হতে পারবেন না কিন্তু সবাই অন্যান্য নেতা হবেন। সবাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আস্থাভাজন ছাত্রলীগ হবেন এটাই আমার প্রত্যাশা। প্রধানমন্ত্রী আপনাদের নিয়ে স্বপ্ন দেখেন। আপনাদের নিয়ে স্বপ্ন দেখেন বলেই তিনি একের পর এক বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজগুলো একেরপর এক পূরণ করে যাচ্ছেন।
কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শনিবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের দ্বিতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলন ঘিরে জবি ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের নিষ্ক্রিয় ও বিতর্কিত নেতাকর্মীদের উপস্থিতি উল্লেখিত হারে বেড়েছে। শুধু তাই নয় গুলিস্তানের পার্টি অফিস, ধানমন্ডির দলীয় অফিস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনসহ আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাকর্মীদের বাসা-বাড়িতে দৌড়ঝাঁপ করতে দেখা যাচ্ছে পদপ্রত্যাশী নেতাকর্মীদেরকে।
প্রসঙ্গত, গত ৩ ফেব্রুয়ারি তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি তরিকুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক শেখ জয়নুল আবেদীন রাসেলের কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় জবি ছাত্রলীগের কমিটি স্থগিত করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। কিন্তু কমিটির কার্যক্রম স্থগিত ও ঘটনার তদন্ত চলাকালীন সময়ে জবি ছাত্রলীগের দুই পক্ষ আবার সংঘর্ষে জড়ালে ১৯ ফেব্রুয়ারি কমিটি বিলুপ্ত করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। এরপর ৬ জুলাই কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আশরাফুল ইসলাম টিটনকে সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক করে ২০ জুলাই সম্মেলনের দিন ঠিক করে।