ভয়েসঅবসিলেট ডেস্ক
ওয়াসিংটন পোষ্ট এর কলাম লেখক জামাল খাশোগী সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের বিরুদ্ধে কলম ধরেছিলেন তিনি। সেই সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগির নৃশংস হত্যার দায় স্বীকার করেছেন সৌদি আরবের প্রভাবশালী যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান।
আমেরিকার সিবিএস চ্যানেলে প্রচারিত হবে এই বিষয়ে একটি ডকুমেন্টারি, সেখানেই এমন ‘স্বীকারোক্তি’ শোনা গিয়েছে। খাশোগি হত্যার এক বছর পূর্তি উপলক্ষে আগামী ১ অক্টোবর প্রচারিত হবে ওই ডকুমেন্টারিটি।
সেখানেই বিন সালমানের মুখে শোনা গিয়েছে এমন কথা। সেই ডকুমেন্টারির ছোট একটি অংশে শোনা গিয়েছে এই কথা।
সেখানে সালমান বলেছেন, ‘এই ঘটনা আমার চোখের সামনেই ঘটেছে। তাই এর সব দায় আমার।’ যদিও ওয়াকিবহাল মহলের মতে, সৌদি যুবরাজ পৃথিবীজুড়ে এতটাই প্রভাবশালী অবস্থানে রয়েছেন যে, এই স্বীকারোক্তি বিশেষ কিছু বদলাবে না।
দ্বিতীয়বার বিয়ের জন্য প্রয়োজনীয় নথি সংগ্রহ করতে গত বছরের ২ অক্টোবর তুরস্কের ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে গিয়ে হত্যার শিকার হন ওয়াশিংটন পোস্টের কলাম লেখক জামাল খাশোগি।
প্রথম থেকেই তুরস্ক সরকার দাবি করতে থাকে, দূতাবাসের ভেতরেই খাশোগিকে হত্যা করা হয়েছে।
সম্প্রতি তুরস্কের প্রভাবশালী একটি সংবাদপত্র ‘দ্য ডেইলি সাবাহ’ একটি অডিয়ো প্রকাশ করেছে। তাতে উঠে আসছে খাশোগিকে কী নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছিল!
পত্রিকাটি জানিয়েছে, সৌদি দূতাবাসে খাশোগিকে হত্যার সময় ঘটনাস্থলে একজন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ উপস্থিত ছিলেন। সৌদি থেকে আসা ‘হিট স্কোয়াড’-এর একজন সদস্য তিনি। খাশোগি সৌদি দূতাবাসে পৌঁছবার ঠিক আগেই তাঁকে ‘উৎসর্গ করা পশু’ হিসেবে উল্লেখ করেন ওই ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ।
শুধু তাই নয়, ‘দ্য ডেইলি সাবাহ’-এর ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, সৌদি দূতাবাসে ঢোকার পরপরই সন্দেহজনক কিছুর আভাস পান খাশোগি। ওই সময় ‘হিট স্কোয়াড’ এর পক্ষ থেকে খাশোগিকে বলা হয়, ইন্টারপোলের আদেশে তাঁকে রিয়াদে ফিরে যেতে হবে। কিন্তু ‘হিট স্কোয়াড’ এর অনুরোধ মানতে রাজি হননি খাশোগি। নিজের ছেলেকে মেসেজ পাঠান তিনি। এরপরই খাশোগিকে ইনজেকশন দেওয়া হয়।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, খাশোগিকে অজ্ঞান করার সময় তিনি অনুরোধ করেছিলেন, তাঁর অ্যাজমা আছে, তাই তাঁর মুখ যেন না বাঁধা হয়। ওই অডিয়ো রেকর্ডিংয়ে যে শব্দ পাওয়া যাচ্ছে, তাতে ধারণা করা হচ্ছে, মুখে বায়ুনিরোধক ব্যাগ বেঁধে, শ্বাসরোধ করে খাশোগিকে হত্যা করা হয়েছিল সৌদি দূতাবাসের ভেতর।
এছাড়া, ঘটনাস্থলে উপস্থিত ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ খাশোগির হাত-পা কাটেন বলেও রেকর্ডিং থেকে বোঝা যাচ্ছে।
সেই অডিয়োর পর সৌদি যুবরাজের এই ‘স্বীকারোক্তি’ সেই নৃশংস খুনেই যেন মান্যতা দিল।