লবীব আহমদ, কোম্পানীগঞ্জ:– পরিবার বাদে মানুষের জীবন নামের কঠিন অধ্যায়ের সূচনাটা ঘটে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাধ্যমে। জীবন গড়ার মূল ভিত্তি’ই গড়ে উঠে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। আর সেই বিদ্যালয়ে যদি কেউ ভালো ভাবে যেতে না পারে এই ডিজিটাল যুগে, তাহলে সে কিভাবে দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে? রাস্তা নেই, বর্ষা এলেই নৌকা ছাড়া বাড়ি থেকে বের হওয়া যায় না। গুরুত্বপূর্ণ একটি গ্রাম মাত্র ৩-৪ কিলোমিটার রাস্তার অভাবে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। যেখানে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকলে ও শিক্ষার্থীরা সুশিক্ষার অভাবে প্রয়োজনীয় শিক্ষা অর্জন করতে পারছে না। রাস্তার অভাবেই সমস্ত কাজ আটকা পড়ে যায়। তেমনি এক নির্মম পরিস্থিতির মধ্য দিয়েই যাচ্ছে সিলেট জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ৬নং দক্ষিণ রণিখাই ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড ডাকাতিবাড়ি গ্রামের। এখানে ডাকাতি বাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নামে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এই বিদ্যালয় বর্তমানে প্রায় ২৮০ এর অধিক ছাত্র-ছাত্রী অধ্যায়নরত। বর্ষাকালে ছাত্র-ছাত্রীদের বিদ্যালয় যাতায়াত করার জন্য কোনো সংযোগ রাস্তা নেই। যার ফলে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এবং শ্রেণীকক্ষে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি সংখ্যা কমছে, যার ফলশ্রুতিতে ফলাফল আশানুরূপ হচ্ছে না। অকালে ঝরে যাচ্ছে অনেক পরিবারের স্বপ্ন।
ভোগান্তি ও দুদর্শা থেকে তারা কবে মুক্ত হবেন এ গ্রামের মানুষ তা একমাত্র আল্লাহ পরে আর কেউ জানেন না। শিক্ষাবঞ্চিত এ গ্রামটি অন্যান্য গ্রামের চেয়ে একেবারেই পিছিয়ে। গ্রামের অধিকাংশ মানুষজন কৃষিকাজের ওপর নির্ভরশীল। ডাকাতিবাড়ি গ্রামে প্রায় ২/৩ হাজার লোক বসবাস করেন। কৃষি কাজ করে অনেকেই জীবিকা নির্বাহ করেন। এই গ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থার জন্য
যে দুইটি রাস্তা রয়েছে তা কাচা। শিক্ষা থেকে গ্রামের মানুষ পিছিয়ে রয়েছে।একমাত্র চলাচলের রাস্তাটি কাচা থাকার ফলে চলাচলে গ্রামবাসীকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বর্ষা মৌসুমে রাস্তাটি এমন বেহাল অবস্থায় পরিণত হয় যে তা জনগণের চলাচলের অনুপোযোগী হয়ে পড়ে। মাত্র ৩/৪ কিলোমিটার রাস্তা পাকা করা হলেই এই গ্রামের চেহারা বদলে যাবে।
প্রাথমিক শিক্ষা সব শিক্ষার মূল ভিত্তি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সোনার বাংলা গড়তে ১ জুলাই ১৯৭৩ সালে এ দেশের প্রাথমিক শিক্ষা জাতীয়করণ করেন।
উক্ত গ্রামে সুশীল সমাজের অনেক লোক রয়েছেন, যারা গ্রামের যোগাযোগ অবস্থা খারাপ থাকার কারণে গ্রামের বাহিরে থেকে পড়ালেখা করেছেন। তেমনি একজন নাসির উদ্দিন। তিনি তার এ গ্রাম সম্পর্কে বলেন যে, ‘পড়ালেখার স্বার্থেই আমি শহরে থাকি। কিন্তু, এরকম অবস্থার কারণে গ্রামের অন্যান্য পরিবারের ছেলেমেয়েরা সুশিক্ষা থেকে বঞ্চিত রয়েছে। এরকম অসুবিধা থাকলে কিভাবে দেশ ডিজিটালের সাথে তাল মিলিয়ে চলবে আমাদের ডাকাতিবাড়ি গ্রাম। আমি উপজেলা প্রশাসন সহ সবার দৃষ্টি কামনা করছি আমার গ্রামের এই বহাল অবস্থার’।
সুতরাং, মাত্র ৩-৪ কিলোমিটার পাকা রাস্তা’ই পারে বিভিন্ন সমস্যা থেকে মুক্ত করতে ঐ গ্রামের মানুষকে। এরকম আরো হাজারো সমস্যা কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার অনেক গ্রামে রয়েছে।