রাফসান রহমানঃ রক্ষণাবেক্ষণের অভাব ও প্রাণী চিকিৎসক না থাকায় মারা যাচ্ছে সিলেট বন্য প্রাণী সংরক্ষণ কেন্দ্রের অনেক মূল্যবান প্রাণী। প্রতিষ্ঠার ১০ মাসের মধ্যেই হরিণ, ময়ূর, খরগোশসহ মারা গেছে অন্তত ২০টি প্রাণী। বিশেষজ্ঞদের মতে, চিকিৎসা ও যথাযথ পরিচর্যার অভাবেই মারা যাচ্ছে এসব বন্য প্রাণী। এছাড়া রয়েছে জনগণের অসচেতনতাও। তবে, প্রাণীদের রক্ষায় নানা ধরনের উদ্যোগ নেয়ার কথা জানিয়েছে বন বিভাগ।
২০১৮ সালের নভেম্বরে নগরীর টিলাগড় ইকোপার্কে ৯ প্রজাতির ৫৮টি বন্য প্রাণী নিয়ে যাত্রা শুরু হয়, বন্য প্রাণী সংরক্ষণ কেন্দ্রের। এতে স্থান পায় ম্যাকাউ, আফ্রিকান গ্রে কিংবা লাভবার্ডসহ বিচিত্র সব পাখির সঙ্গে ডোরাকাটা জেব্রা ও অজগর। কিন্তু প্রতিষ্ঠার ১০ মাসের মধ্যেই তিনটি ময়ূর, একটি হরিণ, একটি অজগর, দুটি খরগোশ ও চুকার পাখিসহ মারা গেছে অন্তত ২০টি প্রাণী।
প্রাণীশালা রক্ষক মাসুদ হাওলাদার বলেন, চিড়িয়াখানার ভেতরে রাস্তা থাকায়, সারারাত গাড়ি চলে। এতে তারা ঠিকমত ঘুমাতে পারে না, তাই অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে। এছাড়া দর্শকরা দেখতে এসে ঢিল মারে, খাওয়ার জন্য চুইংগাম দেয়। এই চুইংগাম যদি তাদের জিহ্বায় পেঁচায় যায়, তাহলে সে মারা যাবে।
মানুষের অবাধ যাতায়াত, বনের ভেতর যান চলাচল ও উচ্চ শব্দের কারণে এমনটা ঘটছে বলে মনে করেন, জীববৈচিত্র্য নিয়ে কাজ করা কর্মীরা।
তবে প্রাণী বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইকো পার্কে প্রাণীদের টিকে থাকার সব সুযোগ-সুবিধা না থাকায় মারা যাচ্ছে।
ভ্যাটোনারী এ্যানিমেল এন্ড বায়োমেটিক্যাল সাইন্সের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোঃ বাসির উদ্দিন বলেন,তাদের জন্য যে ধরণের স্থান বা যে সাইজের খাঁচা দরকার তা দেয়া হচ্ছে না। তারা হঠাৎ করে এই ধরণের পরিবেশে এসে খাপ খেয়ে নিতে সময় লাগে। একসাথে অনেক মানুষকে দেখাতেও তারা অভ্যস্ত না।
বন বিভাগ বলছে, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকা ও প্রতিকূল পরিবেশে প্রাণী মৃত্যুর হার বাড়ছে।
ছোট ছোট টিলা আর বন-বনানীর বিশাল সমাহার। এমন পরিবেশে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের লক্ষ্যে ২০০৬ সালে ১১২ একর জায়গায় পার্কটি গড়ে তোলে বনবিভাগ। এরপর ৩০ একর জায়গায় গড়ে তোলা হয় চিড়িয়াখানা।