নিজস্ব প্রতিবেদকঃ সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমদের পদত্যাগের দাবিতে ২৮ শিক্ষার্থী আজও অনশন চালিয়ে গেছেন। তাদেরকে অনশন ভাঙতে অনুরোধ জানিয়েছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। কিন্তু অনশনকারী শিক্ষার্থীরা এ নিয়ে ছিলেন দ্বিধাদ্বন্দ্বে।মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তারা অনশন চালিয়ে যাচ্ছিলেন।
শপথ পাঠের পর শিক্ষার্থীরা উপাচার্য বাসভবনের সামনে অনশনরতদের কাছে গিয়ে অনশন ভাঙার জন্য অনুরোধ করলেও অনশনরতরা তা ভাঙেনি। রাত সাড়ে ৮টায় এ প্রতিবেদন লিখা পর্যন্ত অনশনরতরা ‘অনশন ভাঙবে কি-না’-এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়নি। সিদ্ধান্ত জানানোর জন্য তারা কয়েক ঘণ্টা সময় নেন।
মেডিকেল টিমের নেতৃত্ব দেয়া নাজমুল হাসান বলেন, অনশনরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে করোনার উপসর্গ পরিলক্ষিত হচ্ছে। কিন্তু তারা নমুনা পরীক্ষা করাতে চাচ্ছেন না। এই অবস্থায় তাদেরকে চিকিৎসা দিয়ে আবার মেডিকেল টিমের সদস্যদের হাসপাতালে গিয়েও অন্য রোগীদের চিকিৎসা দিতে হচ্ছে। ফলে সাধারণ রোগীরাও করোনায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তাই তারা মেডিকেল টিমের কার্যক্রম গুটিয়ে নিয়েছেন। এছাড়া ইতোমধ্যে মেডিকেল টিমের কয়েকজন সদস্যের মধ্যেও করোনার উপসর্গ দেখা দিয়েছে।
আন্দোলনকারীদের মুখপাত্র আরিফুল ইসলাম চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে বলেন, ‘অনশনরত শিক্ষার্থীদের সবার অবস্থার অবনতি হচ্ছে এবং তাদের জীবন সংকটাপন্ন হয়ে পড়েছে। তারা সবাই খিঁচুনি, ব্লাডে অক্সিজেন ও সুগার লেভেল কমে যাওয়া, ব্লাড প্রেশারসহ নানা শারীরিক জটিলতায় পড়ছেন। তারা অর্গান ড্যামেজের ঝুঁকিতে আছেন।’
প্রসঙ্গত, গত ১৩ জানুয়ারি রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদ লিজার বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ তুলে তার পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন হলের ছাত্রীরা। এর জের ধরে ১৬ জানুয়ারি বিকেলে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি ভবনে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করেন। তখন শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা, গুলি ও সাউন্ড গ্রেণেড ছুঁড়ে উপাচার্যকে মুক্ত করে পুলিশ। সেদিন রাতে বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেয় কর্তৃপক্ষ। শিক্ষার্থীরা তা উপেক্ষা করে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে তার পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলনে নামেন।
ফলে ১৭ জানুয়ারি থেকে বাসভবনে অবরুদ্ধ অবস্থায় আছে উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমদ। ১৯ জানুয়ারি দুপুর আড়াইটা থেকে উপাচার্যের পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আমরণ অনশনে বসেন ২৪ শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে একজনের বাবা হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ায় তিনি অনশন শুরুর পরদিনই বাড়ি চলে যান।