আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, প্রভোস্ট কমিটির পদত্যাগসহ তিন দফা দাবি রয়েছে। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের সঙ্গে আমাদের আলোচনা হয়। কিন্তু আলোচনা ফলপ্রসূ না হওয়ায় আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি এবং গতকাল বিকেল চারটার দিকে প্রেস ব্রিফিং করে আল্টিমেটামের ঘোষণা দেই। কিন্তু, প্রশাসন আমাদের দাবি না মেনে মিডিয়ার কাছে উল্টো বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করেছে। সেই বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানোর প্রতিবাদে আমরা আজ রাস্তা অবরোধ করেছি।
এদিকে শনিবার বিকেলে আন্দোলনরত প্রায় দেড় শতাধিক ছাত্রীকে কিলো রোডের পাশে রাস্তা অবরোধ করে গোল হয়ে দাঁড়িয়ে স্লোগান দিতে দেখা গেছে। স্লোগানে তারা বলছেন, ‘যে প্রভোস্টের ঠেকা নাই, সেই প্রভোস্টের দরকার নাই’, ‘তিন দফা, তিন দাবি, মেনে নাও, মেনে নাও’। এ সময় কয়েকজন ছাত্রীর সঙ্গে কথা বললে তারা বলেন, ‘সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত আমরা রাস্তা অবরোধ করে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এরপরে দাবি মেনে না নিলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
এদিকে ছাত্রীদের এই অবস্থানে বাধা প্রদান ও হামলার অভিযোগ ওঠেছে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। আন্দোলনকারী ছাত্রীদের অভিযোগ, সন্ধ্যায় গোলচত্বরে তারা শান্তিপুর্ণভাবে অবস্থান নেন। এসময় ছাত্রলীগের ৩০/৪০ জন নেতাকর্মী এসে গোলচত্বর এলাকায় অবস্থান নেয়। তারা ছাত্রীদের হলে ফিরে যাওয়ার জন্য হুমকি দিতে থাকেন। এসময় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা আন্দোলনকারীদেরর উপর হামলা করে। এতে কয়েকজন আহত হওয়ারও খবর পাওয়া গেছে। তবে বাধা প্রদান বা হুমকির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতারা।
বিশ্বিবদ্যালয় ছাত্রলীগের এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, উপাচার্য মহোদয় ছাত্রীদের দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। তবু পরিস্থিতি ঘোলাটে করতে আন্দোলন করছে। আমরা তাদের হলে ফিরে যেতে বলেছি। কিন্তু হামলা বা বাধা দেইনি।
শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আলমগীর কবির বলেন, শুক্রবারই উপাচার্য স্যার ছাত্রীদের দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। তবে তিনি কিছু সময় চেয়েছেন। এখন তাদের আন্দোলনে নামা অযৌক্তি।
এর আগে, শাবির বেগম সিরাজুন্নেছা চৌধুরী ছাত্রী হলের প্রভোস্ট কমিটির পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা সাতটা থেকে আজ শনিবার সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছিলেন আন্দোলনরত ছাত্রীরা। এছাড়া গতকাল বিকেলে প্রভোস্টের রুমে তালা ঝুলিয়েছেন তারা। আজ বিকেল থেকে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল চত্বরে বসে অবস্থান নেন।
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার রাতে হলের সমস্যা নিয়ে শিক্ষার্থীরা রিডিং রুমে বসে আলোচনা করেন এবং সমস্যার কথাগুলো প্রভোস্টকে বলার জন্য হলে আসার অনুরোধ জানান। তখন প্রভোস্ট জাফরিন আহমেদ লিজা অসুস্থতার কথা জানালে ছাত্রীরা প্রভোস্ট বডির একজন সদস্যকে অল্প সময়ের জন্য হলে আসার অনুরোধ জানান এবং বিষয়টি জরুরি বলে উল্লেখ করলে প্রভোস্ট শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অসদাচরণ করেন। এরপরে শিক্ষার্থীরা হল থেকে বের হয়ে বৃহস্পতিবার রাত দুইটা পর্যন্ত উপাচার্যের বাসভবনের সামনে আন্দোলন করেন