Voice of SYLHET | logo

১লা চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ | ১৫ই মার্চ, ২০২৩ ইং

ঘরে ঘরে চলছে নবান্ন উৎসব

প্রকাশিত : December 14, 2021, 11:44

ঘরে ঘরে চলছে নবান্ন উৎসব

নিউজ ডেস্কঃ আমন ধানে গ্রাম বাংলার ঘরে ঘরে এখন নবান্ন উৎসব। নতুন ধান তুলতে ব্যস্ত কৃষাণ কৃষাণী। মাঠ থেকে ধান কর্তন, আটিঁ বেঁধে নিয়ে আসা, মাড়াই, শুকানো এবং গোলায় তোলার কাজে মহাব্যস্ত সবাই। চলতি সপ্তাহে দুইদিনের বৃষ্টিতে ধান শুকাতে কিছুটা ব্যাঘাত হলেও কৃষকের কাজে কোন বিরতি পড়েনি। এবছর যান্ত্রিক পদ্ধতিতে ধান কাটা ও মাড়াই বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানান কৃষকরা।
এদিকে, সিলেট বিভাগে ইতোমধ্যে ৬৪ ভাগ ধান কর্তন হয়েছে বলে জানিয়েছে সিলেট আঞ্চলিক কৃষি অফিস। ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই সব ধান কাটা সম্পন্ন হবে বলে তারা আশা প্রকাশ করেন।

কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এবছর সিলেট বিভাগে ৪ লক্ষ ৭৭২ হেক্টর জমিতে আমন ধানের আবাদ হয়েছে। যার মধ্যে সিলেট জেলায় ১ লক্ষ ৩৮ হাজার হেক্টর, সুনামগঞ্জ জেলায় ৮১ হাজার ৪৬ হেক্টর, হবিগঞ্জ জেলায় ৭৯ হাজার ৫০১ হেক্টর জমিতে আমনের আবাদ হয়েছে। আবাদ থেকে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ লক্ষ ৮৫ হাজার ৮৮৪ মেট্রিক টন চাল। ইতোমধ্যে মোট আবাদের ৬৪ শতাংশ কর্তন হয়েছে। এরমধ্যে সিলেট জেলায় ১ লক্ষ ৪ হাজার ১শ হেক্টর, সুনামগঞ্জ জেলায় ৪৪ হাজার ৫৭৫ হেক্টর, হবিগঞ্জ জেলায় ৪৩ হাজার ৭২৫ হেক্টর এবং মৌলভীবাজার জেলায় ৭৩ হাজার ২৬ হেক্টর জমির ধান কর্তন হয়েছে।

এদিকে, এবছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি হবে বলে আশা করছে কৃষি বিভাগ। সিলেট বিভাগে আমন আবাদ থেকে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ লক্ষ ১৮ হাজার ৪৭৪ মেট্রিক টন চাল। এর মধ্যে সিলেট জেলায় উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ লক্ষ ২৭ হাজার ৯৯০ মেট্রিক টন চাল। সুনামগঞ্জ জেলায় ১ লক্ষ ৯৩ হাজার ৬১৩ মেট্রিক টন, হবিগঞ্জ জেলায় ২ লক্ষ ১৫ হাজার ৯৩২ হেক্টর এবং মৌলভীবাজার জেলায় ২ লক্ষ ৮০ হাজার ৯৩৯ মেট্রিক টন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ৬৪ দশমিক ২৫ শতাংশ ধান কর্তন থেকে ৬ লক্ষ ৮৫ হাজার ৮৮৫ মেট্রিক টন চাল পাওয়ার কথা জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।

ধান সংগ্রহে ব্যস্ত কৃষকদের দম ফেলার ফুরসত নেই। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কাজ করছেন তারা। সকালে ধান কর্তন ও বাড়িতে নিয়ে আসা ও শুকানোতে ব্যস্ত কৃষক। বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত ধান মাড়াই, পরিষ্কার করা ও সংগ্রহের কাজ করছেন তারা।
মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলার ক্ষেমসহস্র গ্রামের কৃষি জহিরুল ইসলাম জানান, এবছর তিনি প্রায় ১০ ‘কিয়ার’ জমি চাষ করেছেন। উৎপাদন ভালো হওয়ায় এবার ফলন ভালো হবে বলে আশা করেন তিনি।জহিরুল বলেন, সরকারের কৃষি বিভাগ সার্বক্ষণিক যোগাযোগ ও পরামর্শ দেয়ায় তারা সনাতন পদ্ধতির পরিবর্তে উন্নত ও আধুনিক কৃষি পদ্ধতি গ্রহণ করায় উৎপাদন বাড়ছে এবং কৃষক উপকৃত হচ্ছেন।

জৈন্তাপুর উপজেলার লক্ষীপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল মান্নান জানান, তিনি প্রায় ১৬ কিয়ার জমি চাষ করেছেন। ইতোমধ্যে অর্ধেকের বেশি ধান কর্তন করেছেন। উৎপাদন ও দাম পেয়ে তিনি খুশি। অনুরূপ তথ্য প্রকাশ করেন উপজেলার বাউরভাগ গ্রামের কৃষক ফরিদ উদ্দিন আহমদ। তিনি ৫০ থেকে ৬০ কিয়ার জমি আবাদ করেছেন।

এ বছর উৎপাদন ভালো হয়েছে জানিয়ে সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ তৌফিক হোসেন খান জানান, উপজেলার ১২ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে আমনের আবাদ হয়েছে। ইতোমধ্যে কৃষকরা ৭০ ভাগ ধান কর্তন করেছেন। কৃষি অফিস সার্বক্ষণিক কৃষকদের সাথে যোগাযোগ রেখে চলেছে।
কৃষিসম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সিলেট জেলার উপ পরিচালক সালাউদ্দিন আহমদ জানান, ইতোমধ্যে সিলেট জেলার ৮০ ভাগ ধান কর্তন হয়েছে। উৎপাদন ভালো হয়েছে এবং ধানের দামও ভালো পাওয়া যাচ্ছে। ডিসেম্বরের মধ্যেই সব ধান কর্তন সম্পন্ন হবে।তিনি বলেন, কৃষক বিঘা প্রতি উৎপাদন পেয়েছে ১৫ থেকে ১৬ মন এবং বাজারে প্রতি মণ (৪০ কেজি) ধান সাড়ে ১১শ থেকে ১২শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। উৎপাদন ও দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকরা খুশি। কৃষি বিভাগের নিয়মিত প্রশিক্ষণ, উন্নতজানের বীজ সরবরাহ ও পরিমাণমতো সারের ব্যবহারে উৎপাদন ভালো হয়েছে বলে জানান তিনি।

সংবাদটি শেয়ার করুন

সংবাদটি পড়া হয়েছে 435 বার

যোগাযোগ

অফিসঃ-

উদ্যম-৬, লামাবাজার, সিলেট,

ফোনঃ 01727765557

voiceofsylhet19@gmail.com

সামাজিক যোগাযোগ

সম্পাদক মন্ডলি

ভয়েস অফ সিলেট ডটকম কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।