চলতি বছরের বন্যায় দেশের দুর্গত এলাকাগুলোতে আড়াই শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এদের বেশিরভাগই মারা গেছেন পানিতে ডুবে। আর বন্যাকবলিত ৩৩ জেলায় ডায়রিয়া, চর্মরোগ, শ্বাসনালীর প্রদাহসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়েছেন ৫৭ হাজার ৩০১ জন। এর মধ্যে ডায়রিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যাই অর্ধেক।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ন্যাশনাল হেলথ ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট সেন্টারের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও বন্যাজনিত মৃত্যুর’ হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
গত ৩০ জুন থেকে ২৭ আগস্ট পর্যন্ত গত দুইমাসের তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। তাতে দেখা যায়, বন্যাকবলিত এলাকায় ২৫১ জনের মধ্যে পানিতে ডুবে ২১০ জনের, বজ্রপাতে ১৩ জনের, সাপের দংশনে ২৫ জনের, ডায়রিয়ায় ১ জনের এবং আঘাতে ২ জনের মৃত্যু নথিভুক্ত করা হয়েছে।
তবে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এবার বন্যায় মৃতের সংখ্যা ৪২ জন। এর মধ্যে দু’জনের বয়স ৬০ বছরের বেশি। বাকিরা সবাই শিশু এবং তাদের মধ্যে একজন প্রতিবন্ধী।
মৃতের সংখ্যায় এই তারতম্যের বিষয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আতিকুল হক গণমাধ্যমকে বলেন, সংখ্যা নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি রয়েছে। বন্যার পানিতে মৃত্যুর বিষয়ে আমাদের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা যে তথ্য পাঠাচ্ছেন এটাই সঠিক। এখানে বন্যার পানিতে ডুবে বা ভেসে গিয়ে মৃত্যু হলে তাদের নাম-ঠিকানাসহ পূর্ণাঙ্গ তথ্য পাঠাতে হয়। বন্যা আক্রান্ত এলাকার বাইরে বা ভ্রমণে গিয়ে নৌকাডুবি বা অন্যভাবে দুর্ঘটনার তথ্য এখানে যুক্ত করা হয় না।
এদিকে সরকার ইতোমধ্যে জানিয়েছে এবারের চার দফার বন্যায় সারা দেশে ৫ হাজার ৯শ ৭২ কোটি ৭৪ লাখ ৬২ হাজার ৭৬ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতির এই পরিমাণ ১৯৯৮ সালের বন্যার চেয়ে কম। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তির সংখ্যা ৪৩ লাখ ১৪ হাজার ৭শ ৯৩ জন। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ১৩ লাখ ৪৩ হাজার ১শ ২১টি। ক্ষতিগ্রস্ত ঘর ৭ লাখ ৩৭ হাজার ৮শ ২২টি। ক্ষতিগ্রস্ত বীজতলার পরিমাণ ২ লাখ ১১ হাজার ৬শ ২৭ হেক্টর। ক্ষতিগ্রস্ত হ্যাচারি ৮ হাজার ৫শ ২১ হেক্টর। ক্ষতিগ্রস্ত বিদ্যুৎ লাইন ৪৬৩ কিলোমিটার। ক্ষতিগ্রস্ত ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ৩ হাজার ৩শ ৬টি। ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ ৫০৫ কিলোমিটার (সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত ৩৭ কিলোমিটার)। ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ৮৩ হাজার ৪শ ৫৭টি (সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত ৫১টি