Voice of SYLHET | logo

২১শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | ৪ঠা জুন, ২০২৩ ইং

এটা ঠান্ডা মাথার গণহত্যা: তুহিন মালিক

প্রকাশিত : May 04, 2020, 23:28

এটা ঠান্ডা মাথার গণহত্যা: তুহিন মালিক

নিউজ ডেস্ক:-

(এক) দোকানপাট ও শপিংমল খোলার ঘোষনা দিয়ে কফিনের শেষ পেরেকটি ঠুকে দেয়া হলো আজকে। করোনা রোগীর সংখ্যা ১০ হাজারের মাইলফলক স্পর্শের ‘আনন্দে’ ঈদ শপিং এর অনুমতি দিয়ে দেয়া হলো! দ্রুতগতিতে বাড়ছে করোনা, আর আমরা ধীরে ধীরে খুলে দিচ্ছি সবকিছু। ইফতারির বাজার, রেস্টুরেন্ট, গার্মেন্টস -সব তো আগেই খোলা হয়ে গেলো। এবার ‘সীমিত পরিসরে’ দোকানপাট ও শপিংমল খোলার ঘোষনা এলো। এই ‘সীমিত পরিসরের’ ব্যাখ্যাটা কি? যে দেশের মানুষ আইনই মানতে চায়না, সেখানে শর্ত মানতে যাবে কোন দুঃখে! ‘সীমিত পরিসরে’ করোনাকে আমন্ত্রণ জানালেও, দেশের সর্বনাশাটা কিন্তু ‘সীমিত পরিসরে’ হবে না।

(দুই) লকডাউন শিথিল করার আগে ছয়টি শর্ত পূরণের তাগিদ দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এসব শর্ত কি আমরা আদৌ পূরণ করতে পেরেছি? যেমন-
১. রোগ সংক্রমণ কি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছি?
২. দেশের স্বাস্থ্য বিভাগ প্রতিটা রোগীকে শনাক্ত, পরীক্ষা, আইসোলেশন আর চিকিৎসায় এবং সংস্পর্শে আসা প্রত্যেককে শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছে?
৩. নার্সিংহোমের মতো সেবা কেন্দ্রগুলোর মতো নাজুক স্থানগুলোয় ঝুঁকি নিম্নতম পর্যায়ে নামিয়ে আনতে পেরেছি?
৪. অফিস-আদালত ও অন্যান্য দরকারি স্থানে সুরক্ষামূলক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছি?
৫. বাইরে থেকে আসা নতুন রোগীদের পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ ও তত্বাবধানে রাখতে পেরেছি?
৬. দেশের সব মানুষ পুরোপুরি সচেতন, সতর্ক ও নতুন জীবনযাপনের ব্যাপারে অঙ্গীকারবদ্ধ হতে পেরেছি?

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এই ছয়টি শর্ত পূরণ না করে
লকডাউন শিথিল করার মানে হবে জেনেশুনে গণহত্যা।

(তিন) সবকিছু যখন খুলেই দিবেন, তখন এতদিন কেন দেশের মানুষকে এভাবে ‘অযথা’ অবরুদ্ধ করে রাখলেন? পবিত্র রমজান মাসেও মানুষ তার আবেগকে জলাজ্ঞলী দিয়ে মসজিদে না গিয়ে বাসায় তারাবীহ পড়লো কি জন্য তাহলে? কত মানুষ কত সেক্রিফাইস করলো পাশের মানুষটিকে বাঁচাতে! তাদের আত্মত্যাগের কি মূল্যটাই দিলেন! কি প্রয়োজনে তাহলে হাজার খানিক ডাক্তার করোনা আক্রান্ত হলো? কি প্রয়োজনে তাহলে আরো হাজার খানিক পুলিশ করোনা আক্রান্ত হলো? সবকিছু যখন ঠিকই আছে, তাহলে আপনি কেন ভিডিও কনফারেন্স করেন? আপনার মন্ত্রী-এমপি-নেতারা কেন বাসায় কোয়ারেন্টাইনে?

(চার) দোকানপাট, শপিংমল, গার্মেন্টস সব খুলে দিলেন। এবার স্বভাবতই প্রচন্ড দাবী উঠবে মসজিদ খুলে দিতে। সোস্যাল মিডিয়া মসজিদে জামাত বন্ধের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে উঠবে। এতদিন মসজিদ বন্ধের দাবিতে সাপোর্ট পেলেও এবার পাওয়া যাবে না। কারন মার্কেট, শপিংমল, গার্মেন্টস, রাস্তা ঘাট বা দোকানপাট কোথাও করোনা আছে বলে মানুষ যেহেতু বিশ্বাস করে না। তাই মসজিদেও ভাইরাস আছে বলে তখন আর কেউ বিশ্বাস করবে না।

(পাঁচ) আপনি সবই বুঝেন। সবই জানেন। কেউ আপনাকে কেন ‘ভুল বোঝাতে’ যাবে? এবার নিজের গদি শক্ত করতে টাকার সংস্থান করতে গিয়ে কফিনের শেষ পেরেকটা ঠুকে দিলেন! তাহলে প্রস্তুত থাকেন, এবার জানাজাটা পরার জন্য মসজিদ খুলে দিতে হবে। আর ঈদের বড় শপিংটা হসপিটালের বেডেই হবে!

আমরা জনগণ যেন আর মিথ্যা ধোঁকায় না পড়ি। মনে রাখতে হবে, ঈদ শপিং একটা মৃত্যু ফাঁদ। সরকারী সিদ্ধান্ত সরকারের। নিজের জীবনের সিদ্ধান্তটা কিন্তু আপনার। এ মৃত্যু ফাঁদে পা দিয়েছি তো মরেছি!

ডক্টর তুহিন মালিক
আইনজ্ঞ ও সংবিধান বিশেষজ্ঞ

সংবাদটি শেয়ার করুন

সংবাদটি পড়া হয়েছে 293 বার

যোগাযোগ

অফিসঃ-

উদ্যম-৬, লামাবাজার, সিলেট,

ফোনঃ 01727765557

voiceofsylhet19@gmail.com

সামাজিক যোগাযোগ

সম্পাদক মন্ডলি

ভয়েস অফ সিলেট ডটকম কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।