শাবি প্রতিনিধি :-
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবে করোনাভাইরাস শনাক্তকরণ পরীক্ষা চলতি মাসের ১০ তারিখ থেকে শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ল্যাবের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে কিছুটা শঙ্কায় রয়েছেন অনেক শিক্ষক।
জানা গেছে, করোনাভাইরাস শনাক্তের পরীক্ষার আওতা বাড়াতে চায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এ প্রেক্ষিতেই শাবির জেনেটিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি (জিইবি) বিভাগের ল্যাবে করোনা শনাক্তের পরীক্ষা দ্রুত শুরুর চেষ্টা চলছে। এ ল্যাবে ১০ মে থেকে করোনা শনাক্তকরণ পরীক্ষা শুরুর সম্ভাবনা থাকলেও ল্যাবের নিরাপত্তা ব্যবস্থার মান নিয়ে শিক্ষকদের ভেতরে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জিইবি বিভাগের একাধিক শিক্ষক বলেন, ‘বর্তমান ক্রান্তিকালীন সময়ে শাবি এগিয়ে এসেছে, এটা প্রশংসনীয়। তবে সবার আগে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা ভাইরাস শনাক্তকরণে কাজ করবেন তাদের নিরাপত্তার ব্যাপারটা দেখতে হবে। ল্যাবের বায়োসেফটি লেভেল-৩ এ নিয়ে যেতে হবে। সেফটি লেভেল-৩ এ না নেওয়া গেলে তার কাছাকাছি হলেও নিতে হবে। না হয় যারা ল্যাবে কাজ করবেন তাদের জন্য বড় ধরনের সংক্রমণের ঝুঁকি তৈরি হবে।’
তারা আরো বলেন, ‘যে কোন প্রাণঘাতী ভাইরাস পরীক্ষার ল্যাব জনশূন্য স্থানে করতে হয়। সে ক্ষেত্রে আমাদের ডিপার্টমেন্টের ল্যাবে এ পরীক্ষা করলে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জন্য বড় ধরণের ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। তবে যেহেতু আমাদের রিসোর্স কম, সে জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সকল নিয়ম মেনে ল্যাব তৈরি করে করোনা শনাক্তকরণ সম্ভব না। বিশেষ করে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে আইসোলেটেড স্থানও নেই। সেক্ষেত্রে যে জায়গাগুলোতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের যাতায়াত কম সে স্থানে এটা করা যেতে পারে।’
এ ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের জিমনেসিয়াম, হাসপাতাল,ও ‘সি’ বিল্ডিংয়ের টংয়ের পেছনের নতুন বিল্ডিংয়ে এটা করার পরামর্শ দেন তারা। একাডেমিক বিল্ডিংগুলোর তুলনায় এ জায়গাগুলোতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের যাতায়াত কম বলে জানান তারা।
সামগ্রিক প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ে করোনা শনাক্তকরণ পরীক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত জিইবি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. শামসুল হক প্রধান মুঠোফোনে সিলেটভিউকে বলেন, ‘আশা করছি চলতি মাসের ১০ তারিখ থেকে আমাদের ল্যাবে এ ভাইরাস শনাক্তকরণের কাজ শুরু করতে পারবো। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে আগামী পরশু দিন লোক এসে ল্যাব দেখে যাওয়ার কথা রয়েছে।’
বায়োসেফটি লেভেল-৩ এর ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘সেফটি লেভেল-৩ এ নিয়ে যেতে সব ধরনের কাজ করা হচ্ছে। আমাদের ল্যাবে করোনা শনাক্তকরণ পরীক্ষা শুরু হতে দেরী হচ্ছে মূলত এ কারণেই।’
ল্যাব আইসোলেটেড স্থানে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে শামসুল হক প্রধান বলেন, ‘যেহেতু প্রধানমন্ত্রী বলেছেন করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। তাই ডিপার্টমেন্টের ল্যাবে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আনাগোনা থাকবে না সেপ্টেম্বর পর্যন্ত । তাই ডিপার্টমেন্টের ল্যাবের নিরাপত্তার মান নিশ্চিত করে পরীক্ষা শুরু করলে সমস্যা হবে না।’
তিনি আরো বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে আমাদের হাতে বিকল্প কোন পথ খোলা নেই। আমরা যদি জিমনেসিয়াম, হাসপাতাল বা অন্য কোন জাগায় ল্যাব করতে চাই সেটা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। কারণ সেখানে ল্যাবের জন্য নতুন করে অনেক কিছু স্থাপন করতে হবে। আমাদের হাতে যে সময় আছে এ সময়ের ভেতরে এটা কোনভাবেই সম্ভব না