সুনামগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি :কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক এমপি বলেছেন, সরকারিভাবে কৃষকের কাছ থেকে বোরো ধান ক্রয়ে এবার মধ্যসত্ত্বভোগীদেও কোন সুযোগ নেই। কারণ কৃষি মন্ত্রণালয় ক্ষুদ্র ও মাঝারি কৃষকদেও তালিকা তৈরী করেছে।
বুধবার (২৯ এপ্রিল) সুনামগঞ্জের দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার সাংহাইর হাওরে ধান কাটা পর্যবেক্ষণে তিনি এসব কথা বলেন।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, এ্যাপস এর মাধ্যমে দেশের ২২ জেলা থেকে কৃষককের কাছ থেকে ধান ক্রয় করবে সরকার। তাই কৃষক নিজের ধান নিজেই বিক্রি করেত পারবেন।
মন্ত্রী বলেন, আমাদের সারা বছরের মোট চাল উৎপাদনের অর্ধেকের বেশি যোগান দেয় বোরো ধান। সেজন্য শুধু হাওর নয়, সারা দেশের ফসল সুষ্ঠুভাবে ঘরে তোলা জরুরি। এটি করতে পারলে বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা অনেকাংশে নিশ্চিত হবে। কৃষি মন্ত্রণালয় এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
কৃষিমন্ত্রী আরও বলেন, করোনার বিরূপ পরিস্থিতির মধ্যেও হাওরের বোরো ধান কাটার জন্য বিভিন্ন জেলা থেকে শ্রমিকদের আনার ব্যবস্থা করা হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিভিন্ন জেলা থেকে শ্রমিকরা এসে ধান কাটছেন। পাশাপাশি হাওরের জন্য জরুরি ভিত্তিতে ধান কাটা যন্ত্রপাতি দেয়া হয়েছে। প্রতিকূল পরিবেশে হাওরের কৃষক যাতে সহজে যন্ত্রপাতি কিনতে পাওে সেজন্য যন্ত্রের দামের ৩০% দেয় কৃষক এবং ৭০% দেয় সরকার । একই সাথে, দেশের অন্য এলাকা থেকে হাওরের আগাম বোরো ধান কাটার জন্য কম্বাইন হারভেস্টার ও রিপার নিয়ে আসা হয়েছে। এর ফলে ইতোমধ্যে হাওরের ৬৭% বোরো ধান কৃষক ঘরে তুলতে পেরেছে।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে সারাদেশে ধান কাটা সহজতর করতে ২০০ কোটি টাকার মাধ্যমে প্রায় ১৩০০টি কম্বাইন হারভেস্টার ও ৯৩৪টি রিপার, ২২টি রাইস ট্রান্সপ¬ানটারসহ বিভিন্ন কৃষি যন্ত্রপাতি কৃষকের কাছে সম্প্রতি পৌঁছে দেয়া হয়েছে বলে জানান কৃষিমন্ত্রী।
এসময় পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান, সুনামগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য মুহিবর রহমান মানিক, সুনামগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতন, সুনামগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমান, সিলেট ও সুনামগঞ্জ সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য শামিমা শাহরিয়ার, কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (সম্প্রসারণ) মো. হাসানুজ্জামান কল্লোল, ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো.শাহজাহান কবীর, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ, পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান বিপিএম জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এম এনামুল কবির ইমন, সুনামগঞ্জ পৌর মেয়র নাদের বখত এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোহাম্মাদ সফর উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
তিনি বলেন, করোনার কারণে বিশ্বব্যাপী খাদ্য উৎপাদন ব্যাহত হতে পারে। খাদ্য সংকট বা দুর্ভিক্ষের আশঙ্কাও করছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা। এ বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সে বার বার কৃষি উৎপাদন বাড়ানোর নির্দেশ দিচ্ছেন। কৃষিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে প্রতি ইঞ্চি জমিতে ফসল ফলানোর আহ্বান জানাচ্ছেন। আমরা সে লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি।