কোম্পানীগঞ্জ প্রতিনিধি: সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে এবার বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফলন দেখে করোনার ভীতি অনেকটা ভুলে গেছেন কৃষকরা। মাঠের সোনা ঘরে তুলতে তাই ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। কাস্তে হাতে কৃষকের পাশাপাশি কম্বাইন হারভেস্টার যন্ত্রের মাধ্যমে ধান কাটা ও মাড়াই চলছে পুরোদমে। গত ১৫ এপ্রিল উপজেলা কৃষি অফিসের আয়োজনে নমুনা শস্য কর্তনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় এই ধান কাটা। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে পুরো মাঠের ধান ঘরে তুলতে পারবেন বলে আশা করছেন কৃষকরা।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ আনোয়ার হোসাইন জানান, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৫ হাজার ৭৬৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ হয়েছে। তন্মধ্যে হাওর এলাকায় ২ হাজার ৫৯৯ হেক্টর এবং সমতলে ৩ হাজার ১৬৬ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হয়েছে। ইতোমধ্যে সমতল ও হাওরাঞ্চলের প্রায় ৫৮ শতাংশ ধান কাটা হয়েছে।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, ফসলের মাঠ জুড়ে পাকা ধানের সমাহার। স্থানীয়, উফশী ও হাইব্রিড জাতের ধান বিক্ষিপ্তভাবে কাটতে শুরু করেছেন কৃষকরা। জমির পাড়ে ধান মাড়াই ও শুকানোর জন্য কৃষাণ-কৃষাণিরা ব্যস্ত ঘোলা তৈরির কাজে।
দক্ষিণ রনিখাই ইউনিয়নের পশ্চিম বর্নি গ্রামের হাজী মোঃ আব্দুস শহিদ বলেন, এ বছর তিনি ২০ কেদার (৩০ শতকে এক কেদার) জমিতে বোরো ধানের আবাদ করেছেন। ফলন বেশ ভাল হয়েছে। প্রায় ৭০ ভাগ ধান কর্তন শেষ হয়েছে।
কৃষক হরলাল বিশ্বাস বলেন, এবার ধানের ভালো ফলন হয়েছে। করোনাভাইরাসের কারণে এবং বন্যার ভয়ে ধান ঘরে তোলা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলাম। এখন আর ভয় নেই। ধান কাটা প্রায় শেষ।
এদিকে, কম্বাইন হারভেস্টার মেশিনে ধান কাটতে পেরে খুশি পাড়–য়া গ্রামের কৃষক সিরাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, এই মেশিনের সাহায্যে অল্প সময়ের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ধান কাটা, মাড়াই ও ঝাড়াই করায় কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। এতে খরচও কম পড়ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ আব্দুর রাজ্জাক বলেন, কোম্পানীগঞ্জে এবার বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। গত ১৫ এপ্রিল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ধান কাটা শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে উপজেলায় ভর্তুকি মূল্যে একটি কম্বাইন হারভেস্টার যন্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। এই যন্ত্র দিয়ে স্বল্প খরচে ঘণ্টায় তিন বিঘা (এক একর) জমির ফসল কাটা ও মাড়াই করতে পারছে কৃষক। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে উপজেলার সব ধান ঘরে তোলা সম্ভব হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুমন আচার্য বলেন, আমাদের চলমান করোনা যুদ্ধে আশীর্বাদ হয়ে এসেছে বোরো ধান। আমরা চেষ্টা করছি, ক্ষেতের শতভাগ ধানই ঘরে তুলতে। এ লক্ষ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে।