নিজস্ব প্রতিবেদক:-
১৪ দফা দাবিতে দেশব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) সিলেট জেলা কমিটি জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেছে।
রোববার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে সিলেটের জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলামের নিকট স্মারকলিপি হস্তান্তর করেন সিপিবি সিলেট জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আনোয়ার হোসেন সুমন।
দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- করোনা মহাবিপর্যয় থেকে দেশবাসীতে আপৎকালীন বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ, এই সব শক্তিকে নিয়ে পরামর্শ সভার আহবান, জাতীয় বাজেট পুনর্বিন্যস্ত করে করোনা-মহাবিপর্যয় মোকাবিলায় বাজেটে পর্যাপ্ত বরাদ্দ, এই বরাদ্দ থেকে ১০ হাজার কোটি টাকা চিকিৎসা খাতে বরাদ্দ, চিকিৎসকদের ও রোগীদের সুরক্ষা, সব উপজেলায় বিশেষায়িত ব্যবস্থা সম্পন্ন ‘টেস্টিং বুথ’ স্থাপন, দেশের প্রতিটি জেলায় অন্তত একটি করে ‘বিশেষায়িত ল্যাব’ স্থাপন এবং এজন্য প্রশিক্ষিত জনবলের সংখ্যা বাড়ানো এবং শ্রমজীবী মানুষের জন্য বিনা খরচে করোনা পরীক্ষা, মৃত ব্যক্তির লাশ দ্রুত কবরস্থান/সৎকার করার উপযুক্ত ব্যবস্থার গ্রহণ।
এছাড়া ক্ষুধার্ত ও অনাহারের আশঙ্কাসম্পন্ন পরিবারকে রেশনকার্ড প্রদান, আগামী ৩ মাস বিনামূল্যে তাদের কাছে প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী পৌঁছানো, গার্মেন্টসহ সব শ্রমিক-কর্মচারীদের ১/২ মাসের ছুটি ও বেতন পৌঁছানোর দাবি জানানো হয় স্মারকলিপিতে।
স্মারকলিপিতে করোনা রোগী সম্পর্কে বিরূপ ধারণা দূর, সব ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও তথ্যের অবাধ প্রবাহ নিশ্চিত করা, কোভিড-১৯ রোগী ও অন্যান্য রোগীর চিকিৎসার জন্য আরও সুপরিকল্পিতভাবে হাসপাতালগুলোকে বিন্যস্ত করা, কোন রোগী কোথায় চিকিৎসা পাবেন তা জনগণের মধ্যে ব্যাপকভাবে প্রচার এবং কোভিড-১৯ রোগীর জন্য চিকিৎসাকেন্দ্রগুলোর সার্বিক ব্যবস্থাপনা আরও উন্নত করার দাবি জানানো হয়। এজন্য কম মৃত্যু হারের এবং দ্রুত নিয়ন্ত্রণকারী দেশগুলোতে প্রতিরোধের ও চিকিৎসার জন্য গৃহীত পদক্ষেপসমূহ থেকে শিক্ষা নিয়ে তা প্রয়োগেরও আহবান জানানো হয় ।
সরকার ঘোষিত ‘প্রণোদনা’র সিংহভাগ অর্থ সরাসরি কৃষক, শ্রমজীবী, ক্ষুদ্র ও মধ্য বিনিয়োগকারীদের প্রদান, কৃষি ও কৃষক বাঁচানো, নির্ধারিত দামে খোদ কৃষকদের কাছ থেকে ধান ক্রয়, প্রয়োজনে অস্থায়ী ফসল-সংরক্ষণাগার স্থাপন, ক্ষেতমজুরদের নিরাপত্তা, বীমা সুবিধা প্রদান, ক্ষুদ্র ও মাঝারি সবজি চাষি, পোল্ট্রি, ডেইরি ও গবাদিপশু খামারীকে জনপ্রতি ১০ হাজার টাকা সরাসরি সহায়তা প্রদান ও প্রকৃত কৃষক ও খামারীদের জন্য ২% সরল সুদে ঋণ এবং করোনা-মহাবিপর্যয়ে মানুষের বিপর্যস্ত পরিস্থিতির সুযোগে ফসল, গরু-ছাগল, জমি-জমা-সম্পত্তি স্বাভাবিক দামের চেয়ে কম দামে কিনে নেয়া (ডিসট্রেস সেইল) বেআইনি ঘোষণা ও তা কঠোরভাবে রোধের দাবি জানানো হয় স্মারকলিপিতে।
সম্মিলিত উদ্যোগে সারাদেশে প্রতিটি গ্রামে, এলাকায় ‘গ্রাম সুরক্ষা কমিটি’ গঠন, বরাদ্দের সবটুকু ‘উপযুক্ত পরিবার’এর প্রাপ্তি নিশ্চিত, আপৎকালীন মজুদ হিসেবে ‘জনভাণ্ডার’ গড়ে তোলাসহ গ্রামের সব মানুষের সুরক্ষায় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান হয়। স্মারকলিপিতে, সিন্ডিকেটের মাধ্যমে অসৎ ব্যবসায়ীরা কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির মাধ্যমে বাজার অস্থিতীশীল করে যাতে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির দাম বৃদ্ধি করতে না পারে, তার জন্য কঠোর নজরদারী ও শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহনসহ টিসিবি’র কার্য়ক্রম সক্রিয় করার দাবি জানানো হয়।
তাছাড়া করোনা সংক্রান্ত গুজব ও কুসংস্কারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া এবং হালনাগাদ বৈজ্ঞানিক তথ্যগুলো সম্পর্কে জনগণকে অবহিত করানো। করোনার সময় অন্যান্য রোগে আক্রান্ত জনগণও যাতে চিকিৎসা সেবা পায়, সেদিকে নজর দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে