নিউজ ডেস্কঃ
রাত এখন দুইটা পেরিয়ে। চোখে ঘুম নেই।
কোথায় চলেছি আমরা ? হে আল্লাহ্ এই দিন গুলির শেষ কোথায়?
তিন বছরের শিশুটি নিশ্চিন্তে ঘুমুচ্ছে পাশে। চলছে আকাশের গর্জন। ভয়ে জাগ্রত হয় কিনা সে পাহারায় আছি পাশে।
আমার ভাই মানবতার মহান চিকিৎসক ডাক্তার মঈন উদ্দিন ভাইয়ের সন্তানদের কথা মনে হতেই হৃদয়টা ভেঙ্গে পড়ছে। চিন্তা, হতাশা, ক্ষোভ ঘিরে ধরেছে। অব্যবস্থপনা, তেলবাজ, নাটাই সরদারের কবলে এক অর্বাচীন সমাজ ব্যবস্থায় আমাদের বসবাস।
বাংলাদেশের অথর্ব, অযোগ্য স্বাস্থ্য মন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করে আজকের লেখা শুরু করতে চাই।
লেখাটি কোন দিকে মোড় নিবে জানিনা। কারন আজ সকাল থেকে বেদনা বিধুর মন নিয়ে বাসায় শুয়ে বসে পায়চারি করে দিনপার করেছি।
বিভিন্ন পত্রিকা টিভি থেকে ফোন করে সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। যতটা সম্ভব সহযোগিতা করেছি।
আমার ভাই, আমার আপনজন, আমার পারিবারিক আত্মীয়, আমাদের অভিভাবক ডাক্তার মঈন উদ্দিন ভাই দুনিয়াতে নেই। কথাটি সকলের মতো আমাদের জন্য বেদনাদায়ক। সে বিষয়ে পরে আসছি।
ডাক্তার মঈন ইন্তেকাল করেছেন। তাকে আমরা আর ফিরে পাবনা। এটাই নির্মম সত্য। কিন্তু এভাবেই কেন চলে যেতে হবে একজন মানবতাবাদী চিকিৎসককে ?
আমি আজ কিছু প্রশ্ন রেখে যাব।
ডাক্তার মঈন সংকটাপন্ন অবস্থায় ঢাকা যাওয়ার দুই দিন আগে সিলেটের জেলা প্রশাসকের সাথে প্রধানমন্ত্রীর ভিডিও কনফারেন্স আমি টিভিতে বসে দেখছিলাম। সেখানে সিভিল সার্জন সহ সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তার সরকারের নেওয়া নানা পদক্ষেপের কথা বর্ননা করছিলেন। শুনে বেশ ভালই লাগছিল। তিনি জেলা প্রশাসক এর কাছে জানতে চেয়েছিলেন সিলেটের অবস্থা নিয়ে কোন কিছুর অভাব বা সংকট আছে কি না ? জেলা প্রশাসকের কথা শুনে সেদিন আমার কাছে মনে হয়েছিল সোনায় মোড়ানো সিলেটে কোন সমস্যাই নেই। এ তো আমরা হিরার খচিত তৈরি নগরে বাস করছি। আমরা এতই সৌভাগ্যবান !
সেদিন আমার মনে কয়েকটি প্রশ্ন তৈরি হয়েছিল। আমার কাছে মনে হচ্ছিল সরকার দেশ পরিচালনার কাঠামো গত পরিবর্তন নিয়ে এসেছে অতি কৌশলে। এই কৌশলে জেলা প্রশাসকদের একচ্ছত্র ক্ষমতার অধিপতি বানানো হয়েছে। কয়েকটি জেলায় দেখলাম জেলা প্রশাসকের সাথে কথা বলার পর জেলা প্রশাসক বলছেন, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি অনুমতি দিলে আমি মাননীয় সংসদ সদস্যের কাছে মাইক্রোফোন দিতে পারি”। কোথায় গিয়ে দাড়িয়েছেন আমাদের মিড নাইটের এমপিরা ভাবুনতো একবার !
এখানে একটি বিষয় বুঝতে দ্বিধা নেই জনপ্রতিনিধি থেকে এখন আমলাদের গুরুত্ব অনেকাংশে বেশি। অথচ তারা ল মেকার বা আইন প্রনেতা। আর আমলারা হলেন সেই আইন বাস্তবায়নকারী স্থানীয় প্রতিনিধি। একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় আমলাতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা জনপ্রতিনিধিদের, জন রায়কে অবমাননার শামিল। এটি হতেই পারেনা।
ফলাফল যা হবার তার একটি উদাহরণ ডাক্তার মঈন
উদ্দিন।
কারন- জনপ্রতিনিধি থেকে আমলাদের কোন অবস্থায়ই জনগণের সেন্টিমেন্ট, প্রয়োজন বা অধিকার বুঝার কোন সুযোগ নেই। তারা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ নয়। তারা কেবলই প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী।
প্রধানমন্ত্রী সিলেটের জেলা প্রশাসকের সাথে ভিডিও কনফারেন্সে কথা বলছেন অথচ সেখানে নেই স্থানীয় মেয়র, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, নেই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। জেলা প্রশাসক, সিভিল সার্জন ও ইউএনও, এসিল্যান্ড তথা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা সিলেটের মানুষের চাহিদা বুঝার সুযোগ কতটা? তারা প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা আর নিজেদের প্রমোশনের চিন্তায় যা যা তেলবাজি করার ততটাই করেছেন বৈকি।
যাই হোক যে কারনে এই প্রসংগটি আনতে হলো তা স্পষ্ট। ডাক্তার মঈন করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর আট এপ্রিল যখন তার অবস্থার অবনতি হলো তাকে শামসুদ্দিন হাসপাতালের করোনা আইসোলেশন সেন্টারে ভর্তি করা হলো। তার আইসিইউ এর প্রয়োজন হলো। এরপর প্রয়োজন হলো ভেন্টিলেশন আইসিইউ। বিকালে ওসমানী হাসপাতালের একজন কর্তাব্যক্তি জানালেন শামসুদ্দিন হাসপাতালে ভেন্টিলেশন আইসিইউ নেই। দুটি মেশিন আছে সেগুলো পরিচালনার জন্য লোকবল নেই । তার পরিবার থেকে বারবার ওসমানী হাসপাতালের ভেন্টিলেশন আইসিইউ দেওয়ার অনুরোধ করলেন, তার সহকর্মী চিকিৎসকগন প্রশাসনের কাছে অনুনয় বিনয় করলেন, ওসমানী হাসপাতালের পরিচালক ও সহকারী পরিচালক তাতে কর্নপাত করলেন না !
তার পরিবার সিদ্ধান্ত নিলো ডাক্তার মঈন কে বাঁচাতে হবে। তারা ওসমানী হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডাক্তার হিমাংশু সাহেবের কাছে এয়ার এম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করার জন্য আবেদন করলেন। তিনি বিষয়টি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহা পরিচালকের সাথে কথা বলতেই রাজি হলেন না !
অগত্যা নিরুপায় হতাশ কিংকর্তব্যবিমূঢ় ডাক্তার মঈনের পরিবার সিদ্ধান্ত নিলেন যে করেই হোক ঢাকা নিতেই হবে। কিন্তু সিলেটের কোন হাসপাতালের ই আইসিইউ সমৃদ্ধ এম্বুলেন্স নেই। একমাত্র ফুলতলী সাহেবের ছেলে হুছামুদ্দিন চৌধুরীর মালিকানাধীন ওয়েসিস হাসপাতালের এই এম্বুলেন্স রয়েছে। অনেক অনুনয় বিনয়ের পর ওয়েসিস হাসপাতালের এম্বুলেন্সের চালককে রাজি করিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেই এম্বুলেন্সে করে ডাক্তার মঈন কে ঢাকায় নেওয়া হলো।
সেই এম্বুলেন্সের চালককে স্যালুট জানাই।
সন্ধ্যায় ওসমানী হাসপাতালে সহকারী পরিচালক সাংবাদিকদের বললেন, শামসুদ্দিন হাসপাতালে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রয়েছে। মঈন কে ঢাকা নিয়ে যাওয়া তার পরিবারের একান্ত নিজস্ব বিষয় !
ডাক্তার মঈনের পরিবারের আত্মীয় হিসেবে, সিলেটের গর্বিত একজন বাসিন্দা হিসেবে, একজন গনমাধ্যম কর্মী হিসেবে আমি কিছু প্রশ্ন রেখে যাই। যদি আমারও মৃত্যু হয় কিংবা আমাকে গ্রেফতার করা হয় তাহলে সিলেটবাসী আপনারা প্রশ্নের উত্তর গুলো খোঁজে নিবেন।
সিলেটের জেলা প্রশাসক প্রধানমন্ত্রীকে যে পরিমাণ প্রস্তুতির কথা বললেন তার মধ্যে কি এই হাসপাতালের আইসিইউ, ভেনাটিলেশন আইসিইউ, লোকবলের অভাবের কথা তিনি জানতেন না ? তিনি আইসোলেশন ওয়ার্ড কি সরেজমিনে পরিদর্শন করেছিলেন? এত সমস্যা থাকার পরও তিনি প্রধানমন্ত্রীকে সিলেটের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি গোপন করলেন কেন ?
ওসমানী হাসপাতালের একজন বিকালে বললেন – শামসুদ্দিন হাসপাতালে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই, আরেকজন সন্ধ্যায় বললেন সব ব্যবস্থা আছে ! পরিবার, চিকিৎসক, ইন্টার্নী, স্টুডেন্টসদের দাবি স্বত্তেও একজন অধ্যাপককে ওসমানীর আইসিইউ এবং এয়ার এম্বুলেন্সের ব্যবস্থা স্বাস্থ্য বিভাগ করতে দ্বিধায় ভুগছিলেন কেন ?
যদি আপনারা ডাক্তার মঈনের পলিটিক্যাল আইড্রোলজির কারনে এই প্রতিহিংসা পরায়ন মানসিকতা লালন করে থাকেন তাহলে আজ বলতে দ্বিধা নেই আপনারা ডাক্তার হয়েছেন ঠিক , তেলবাজি দলবাজি করে চেয়ারে বসেছেন ঠিক কিন্তু মানুষ হতে পারেননি ! যদি নিজেকে মানুষ ই মনে করেন তাহলে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও বর্তমান কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি মঞ্জুর মুর্শেদ অসীমের ফেসবুকের স্ট্যাটাস গুলো পড়ে আসুন, ওসমানী হাসপাতালের গাইনি বিভাগের প্রধান ডাক্তার নাইমা আখতারের লেখা পড়ুন।
প্রধানমন্ত্রীর কথা অনুযায়ী করোনা মোকাবেলা যদি একটি যুদ্ধ হয় তাহলে সেই যুদ্ধের একজন সৈনিককে আপনারা কেন তার প্রাপ্য সুযোগ থেকে বঞ্চিত করলেন? হয়তো এয়ার এম্বুলেন্স পেলে দ্রুত আইসিইউ পেলে একজন মানুষকে বাঁচানো যেতো।
সিলেটবাসী এই প্রশ্নগুলোর উত্তর জানতে চাইতেই পারে।
করোনা মোকাবেলা যদি রক্তপাহীন তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ হয় তাহলে সেই যুদ্ধে লাল সবুজের দেশের প্রথম শহীদ ডাক্তার মঈন উদ্দিন । আর আপনারা সেই যুদ্ধের যুদ্ধাপরাধী রাজাকার দেশদ্রোহী ।
সিলেটের সাধারণ মানুষ সিলেটের চিকিৎসা ও শিক্ষক অঙ্গনের রাজনীতি নিয়ে খুব একটা খবর রাখেননা। মানুষ ব্যস্ত অর্থ আর পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় নিয়ে। এই দুই অঙ্গনে কত নোংরা খেলা হতে পারে তা বলা বাহুল্য।
সিলেটের গোটা স্বাস্থ্য বিভাগে আজ শকুনের কালো থাবা। এরা সিলেটের আধ্যাত্মিকতার বিরোধী, সিলেটের উন্নয়ন বিরোধী, এক কথায় সিলেট বিদ্ধেষীদের হাতে আজ জিম্মি স্বাস্থ্য বিভাগ।
খ্যাতিমান চিকিৎসক ডাক্তার মঈন উদ্দিন ভাই আমার তালতো ভাই। আমার আপন বোন জামাইয়ের আপন ফুফুত ভাই। শুধু তাই নয় তিনি আমার উপজেলার রত্ন গর্ভা সন্তান। ভাবিও পার্কভিউ মেডিক্যাল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক। তার শ্বশুর ও একজন চিকিৎসক।
একজন ডাক্তার মঈনের জন্য আজ গোটা সিলেট যেন শোকে মূহ্যমান। মহামারী করোনায় কে কখন কিভাবে কোথায় হারিয়ে যাই একমাত্র মহান মাবুদ জানেন। কিন্তু একজন মানবতাবাদী পরোপকারী নরম প্রকৃতির এই মানুষকে হারিয়ে সিলেটের মানুষের যে অপূরনীয় ক্ষতি হলো তা কখনো পূরন হবার নয়।
রোগী পাঠাতাম, নিজেও যেতাম। চেম্বার থেকে বের হওয়ার সময় একটা টোকেন হাতে ধরিয়ে দিতেন। চিরচেনা হাসি দিয়ে বলতন এটা সামনে আমার সহকারীকে দিয়েন। আমি বুঝতাম মঈন ভাই কেন এটা দিচ্ছেন। বড় নোট দেওয়ার পর সহকারী ছেলেটি যখন টাকা ফিরিয়ে দিতো আমি বলতাম একি ? একটা হাসি দিয়ে বলতো স্যার লিখে দিয়েছেন। এই হলেন আমাদের মঈন ভাই।
বছর দুয়েক আগে আমার আম্মার চিকিৎসা নিয়ে ইবনে সিনার সাথে একটু ভুল বুঝাবুঝি হয়। এই ঘটনার পর থেকে আমি ইবনে সিনায় খুব বেশি প্রয়োজন ছাড়া যাইনি ।
পরবর্তীতে একটি সমঝোতা বৈঠকে বিষয়টি সুন্দর সমাধান হয় এবং ইবনে সিনার চেয়ারম্যান মাওলানা হাবিবুর রহমান আমাকে পরম মমতায় কপালে চুমু দিয়ে বুকে টেনে নেন আমার আম্মার কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন।
এর কিছুদিন পর আমার মামা শ্বশুরকে দেখতে আমি ইবনে সিনায় যাই। সেখান থেকে ফিরে আসার সময় লিফটের সামনে মঈন ভাইয়ের সাথে দেখা। চিরচেনা হাসি দিয়ে বললেন “আপনে ভুলে কিতা ঘটাইলিছইন। কান্দার মানুষের লগে ভুল বুঝাবুঝি বেশিই হয় হা হা হা……” ।
কিন্তু দুঃখের বিষয় আত্মীয়তার বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার পর আর মঈন ভাইয়ের চেম্বারে যাওয়া হয়নি । কারন আমি নিজেই বিব্রত বতোধ করতাম। সে অন্য বিষয়।
আজ বড্ড কষ্ট হচ্ছে। ছোট্ট দুটি ছেলের জন্য। এর মধ্যে একজন অটিজম। বাবাহীন আকাশটা তাদের কত বড় হবে ? বাবাহীন ঘরটা তাদের কেমন হবে ? আমরা যারা সন্তানের বাবা ভাবলেই যেন বুকটা দুমড়ে মুচড়ে যায়। আজ প্রধানমন্ত্রী তাদের দায়িত্ব নেওয়ার কথা বলেছেন। ভাল কথা। তবে এই দায়িত্বটা আপনি বা আপনার প্রশাসন আগে নিলেই জীবনটা বেচে যেতো বলে মনে হয়।
আজ ভারাক্রান্ত হৃদয়ে সিলেটবাসীর পক্ষ থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে দুটি দাবি জানাবো। যে আইসিইউ না পেয়ে আপনার একজন যোদ্ধা না ফেরার দেশে চলে গেলেন তাঁর নামে ওসমানী হাসপাতালের আইসিইউ ওয়ার্ডকে “ডাক্তার মঈন উদ্দান আইসিইউ কর্নার” নাম করন এবং মাননীয় সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক সাহেবের প্রতি অনুরোধ ডাক্তার মঈন আপনার নিজ ইউনিয়নের গর্বিত সন্তান। নাদামপুর গ্রামের মূল সড়কটিকে “ডাক্তার মঈন উদ্দিন সড়ক” হিসেবে নাম করন করার অনুরোধ করছি।
এই দুটি কাজ করার মাধ্যমে অন্তত ভবিষ্যত্ প্রজন্মের কাছে একজন মানবতাবাদী মানুষকে ধরে রাখার চেষ্টা করা হোক।
এখানে আরেকটি বিষয় আলোকপাত করতে চাই। কিছু কিছু ব্যক্তি ডাক্তার মঈন উদ্দিনের ছাত্র জীবনের রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রাজনৈতিক ফায়দা নিতে উঠে পড়ে লেগেছেন বলে মনে হলো। প্রকৃত পক্ষে এরা রাজনীতির আতুর ঘরের পুতুল। একজন মানুষ খ্যাতিমান মানবতাবাদী চিকিৎসক এর চেয়ে বড় পরিচয় মানুষের জীবনে আর হতে পারে না। যারা রাজনৈতিক কারনে ডাক্তার মঈনকে তার প্রাপ্য সুযোগসুবিধা থেকে বঞ্চিত করেছে এবং যারা তাকে নিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করতে চায় এরা উভয়েই এক কাতারের।
মানবতার মহান চিকিৎসক, মানবতার বন্ধু, একজন মানুষ গড়ার কারিগর। ভাটি বাংলার সমৃদ্ধ জনপদ শিল্প নগরী ছাতকের রত্ন গর্ভা সন্তান, বৃহত্তর সিলেটের আলোকিত মানুষ , মানুষের হৃদয়ের মনি কোঠায় স্থান করে নেওয়া ডাক্তার মঈন উদ্দিন ভাইকে আল্লাহ শাহাদতের মর্যাদা দান করুন।
কথা ছিল তার নানা বাড়ি আমার বোনের বাড়ি আসলে আমাদের এখানেও বেড়াবেন। কিন্তু সে দেখা আর হলোনা। মানুষ হিসেবে চলার পথে মঈনউদ্দিন ভাই কাউকে কষ্ট দিয়ে থাকলে ক্ষমা করে দিবেন।
আল্লাহ্ তার বান্দাকে মাফ করুন। জান্নাতের মেহমান করে নিন। পরিবারের সদস্যদের ধৈর্য ধারনের তৌফিক দান করুন।
রাষ্ট্র তোমার নাগরিকের জীবনের নিরাপত্তা বিধান করা তোমার দায়িত্ব। পদ্মা সেতু, মেট্রো রেল, টানেল, হেনতেন এর আগে আইসিইউ, এয়ার এম্বুলেন্সের বেশি প্রয়োজন ডাক্তার মঈনউদ্দিন রাষ্ট্রকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে গেলেন ।
বিদায় ডাক্তার মঈন উদ্দিন ভাই
ঘুমাও হে প্রশান্ত আত্মা জান্নাতের বিছানায়।
এনামুল হক
সাংবাদিক, কলামিষ্ট
সিলেট- 16 – 04 – 2020
2:10 am