সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বর্ণী গ্রাম বর্তমানে এক শহুরে জনপদের নাম। গ্রামের বাসিন্দারা সবাই উল্লসিত। কারণ এই গ্রামের পূর্বপ্রান্তে নির্মাণ করা হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন ইলেকট্রনিক সিটি (হাইটেকপার্ক)। যেখানে ৫০ হাজার লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে। জীবনমান উন্নয়ন হবে অবহেলিত এই গ্রামবাসীর। বাড়ছে আশপাশের জমির মূল্যও। তবে গ্রামের বাসিন্দা অধ্যক্ষ সাকির উদ্দিনের দাবি, গ্রামের শিক্ষিত অর্ধশিক্ষিত বেকারদের যেন এখানে চাকুরীর ব্যবস্থা করা হয়।
শহর থেকে মাত্র ১৮ কিলোমিটার উত্তরে সিলেট সালুটিকর কোম্পানীগঞ্জ সড়কের উত্তর পূর্বপাশে প্রায় ১৬২.৮৩ একর জমির উপর এই পার্ক নির্মাণের কাজ এগিয়ে চলছে। ২শ’ ৯০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিতব্য এই ইলেকট্রনিক সিটির কাজ চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। আর এটি নির্মাণ কাজ শেষ হলে এখানে প্রায় ৫০ হাজার লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি বেসরকারি দেশী বিদেশী উদ্যোক্তাদের পার্কে বিনিয়োগ করতে আহবান জানানো হয়েছে। ইলেকট্রনিক সিটি নির্মাণ কাজে নিয়োজিত প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো: গোলাম সরওয়ার ভুঁইয়া এসব তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানান, পর্যটন নগরী খ্যাত সিলেটের নৈসর্গিক সৌন্দর্য অক্ষুন্ন রেখে নির্মিত হচ্ছে এই হাইটেক পার্ক।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে আরো জানা গেছে, ২০১৭ সালের ২৫ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেকের এক সভায় এই প্রকল্পটি অনুমোদন করা হয়। তখন দেশের ২৮টি জেলায় এই ইলেকট্রনিক সিটি নির্মার্ণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এর ধারাবাহিকতায় সব আনুষাঙ্গিকতা শেষে ২০১৮ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বর্ণী এলাকায় এই পার্ক নির্মাণের লক্ষ্যে মাটি ভরাট কাজ শুরু হয়। ইতোমধ্যে সাইট নির্মাণের কাজ শেষ হয়ে গেছে। রাস্তা থেকে পার্কের সাথে সংযোগ স্থাপনকারী ব্রীজের ঢালাইয়ের কাজ আগামী আগস্ট মাসে শেষ হওয়ার কথা। বিদ্যুৎ সংযোগের জন্যে প্রায় ৩০ কিলোমিটার লাইন টানা শেষ হয়েছে। চলছে সাব স্টেশন নির্মাণের কাজ। ডিসেম্বরের মধ্যে সব ধরনের বেসিক কাজ শেষ হয়ে যাবে। গ্যাস সংযোগের জন্যে ইতোমধ্যে জালালাবাদ গ্যাস কর্র্তৃপক্ষকে ৬২ কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। এখানে ৩১ হাজার বর্গফুট বিশিষ্ট একটি আইটি বিজনেস সেন্টার নির্মাণ করা হবে। ইলেকট্রনিক সেবাকে অগ্রাধিকার দিয়ে ১৪৮ ধরনের সেবা প্রদান করা হবে এই পার্ক থেকে। এই ইলেকট্রনিক সিটি নির্মাণ কাজ শেষ হলে সিলেট থেকেই তৈরি হবে উন্নত প্রযুক্তির সফটওয়্যার, ইলেকট্রনিক নানা পণ্য ও উন্নত প্রযুক্তির নানা যন্ত্রাংশ। বাংলাদেশ নৌবাহিনীর একটি চৌকস প্রকৌশল দলের তত্ত্বাবধানে সমগ্র কার্যক্রম চলছে। –